শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়সংলগ্ন ৫টি গ্রামে একাধিক বাঘের আক্রমণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী। শুধু রাতে নয়, বাঘ দিনের বেলাতেও খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এবং বনের সবুজ মাঠে চরাতে দেওয়া গবাদিপশুকে আক্রমণ করছে বলে জানা গেছে।
বন্যহাতির অব্যাহত তাণ্ডবের পর এবার গত এক সপ্তাহ ধরে ঝিনাইগাতীর ওইসব গ্রামে গরুসহ প্রায় ২০টি ভেড়া ও ছাগল বাঘের পেটে গেছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাঁকাকুড়া, পশ্চিম বাকাকুড়া, গান্ধিগাঁও, হালচাটি ও ছোট গজনী গ্রামের মানুষ বন্যহাতির পর এখন বাঘ আতঙ্কে রয়েছেন। বর্তমানে বাঘ আতঙ্কে বন এলাকায় গবাদিপশু চরাতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরোও পড়ুন: ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত
টেকনাফে ভেসে এলো আরও দুই তরুণীর লাশ
আর কোনো খারাপ মানুষের সঙ্গে চলতে চাই না: শাকিব খান
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে জানান, প্রকাশ্যে ঝিনাইগাতীর বনাঞ্চলে চলাফেরা করছে বাঘ। সেই সঙ্গে বনসংলগ্ন বিভিন্ন বাড়িতে হামলা করে ছাগল ও ভেড়া কামড় দিয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তী সময় গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া ওই ছাগল ও ভেড়ার নাড়ি-ভুঁড়ি, দেহাবশেষ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। বন বিভাগের বনপ্রহরী আলম মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বাঘের আনাগোনা শুরু হয়েছে। আমি নিজের চোখেও বাঘ দেখেছি। এ ছাড়া রাতে আমার বাড়ি থেকে দুটি ছাগল বাঘে কামড় দিয়ে ধরে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তারা আমাদের সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
উত্তর বাঁকাকুড়া গ্রামের আব্দুর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, রাতে আমার ছাগল বাঘে আক্রমণ করে। আমি বাঘকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। পরে বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাড়া করলে আমার ছাগলটি ছেড়ে দিয়ে বাঘ চলে যায়। এতে আমার ছাগলটি গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ছাগলটিকে এখন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দিনের বেলায় বাঘ গহিন বনে অবস্থান করে। রাতের বেলায় এদের আনাগোনা শুরু হয়। আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি। বিশেষ করে আমাদের শিশু বাচ্চাদেরকে আমরা দিনের বেলাতেও বাড়ির বাইরে বের হতে দিচ্ছিনা।
বন ও বনের আশপাশে বাঘের আক্রমণের বিষয়ে রাংটিয়া রেঞ্জের গজনি বিটের বিট কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ জানান, সম্প্রতি গারো পাহাড়ে গভীর জঙ্গলে বাঘের আগমন ঘটেছে। তবে আমরা গ্রামবাসীদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও সতর্ক করার জন্য মাইকিং করার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।